নাকের পলিপাস এর লক্ষণ
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব পলিপাস নিয়ে পলিফাজটা আসলে কেন হয় পলিপাস কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে আমাদের শরীরে পলিপাস হলে তার করণীয় পলিপাস কোন জীবাণু থেকে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পলিপাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং পলিপাস রোগ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন তাহলে পলিপাস রোগের সঠিক ধারণা পাবেন।
নাকের পলিপাস এর লক্ষণ
মানুষের শরীরে ইসনোফিল এবং সিরাম আইজিইর মাত্রা বেশি হলে ঠান্ডা, সর্দি, হাঁচি কাশি হয়ে থাকে। এর ফলে নাকের ভিতর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন ধরেন অ্যাজমা, এলার্জি, সর্দি ও ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। এই সমস্যাগুলো নাকের পলিপাস এর লক্ষণ। পলিপাস সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন মেক্সিলারি এনট্রোকন পলিপাস এবং ইটমাইরেল পালিপাস।
ইটমাইরেল পালিপাসে আক্রান্ত হলে নাকের কোষ পাতলা হয়ে মাংসপেশী ফুলে নাক বন্ধ হয়ে যায়। মেক্সিলারি এনট্রোকন পলিপাসে আক্রান্ত হলে মটরের দানার মত নাকের ভিতরে মাংস বৃদ্ধি হয়। মেক্সিলারি এনট্রোকন পলিপাস হলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নাকে পলিপাস এর লক্ষণ গুলো হল।
- নাক দিয়ে পানি ঝরতে থাকা নাকের ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়া।
- নাকের দুই দিকে কিংবা একদিকে আঙ্গুর ফলের মত কিছু একটা ঝুলতে থাকে।
- ঘনঘন মাথাব্যথা চোখ ব্যথা চোখের কোনে ময়লা জমা হতে পারে।
- কানে কম শুনতে পাওয়া কিংবা কান বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- ঘন ঘন সর্দি লাগা জ্বর হওয়া হাঁচি দিলে চোখ নাক দিয়ে পানি আসতে পারে।
- মাসের যে কোন সময় অসুস্থ থাকা বিশেষ করে সর্দি লাগা জ্বর হওয়া এগুলো ঘন ঘন হতে পারে।
নাকের ভিতরে যেসব কারণে পলিপাস হয়ে থাকে তার একটি ছোট্ট তালিকা।
- নাকের বায়ুথলি থেকে পলিপাস সৃষ্টি হয়।
- এলার্জি যদি শরীরে অতিরিক্ত থাকে তাহলে পলিপাস হয়ে থাকে।
- ফুলের রেনু, ধোঁয়া, ধুলোবালু মধ্যে থাকলে পলিপাস হয়ে থাকে।
- নাক ডাকা অভ্যাস থাকলে নাকে পলিপাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- নাকে ময়লা জীবাণু জমে থাকলে পলিপাস হয়।
- সর্দি লেগে সর্দি যদি পেকে পুজ হয়ে যায় তাহলে পলিপাস হতে পারে।
নাকের পলিপাস হলে করনীয় কি
শুরুর দিকে নাকে পলিপাস হলে এটি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়। তবে যদি জটিল পর্যায়ে চলে যায় তাহলে অপারেশন করা লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীকে নাকের কিছু ড্রপ ও এলার্জির ওষুধ এবং কিছু স্প্রে দেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের পলিপাস এই চিকিৎসা গুলোর মাধ্যমে সেরে যায় কিন্তু যদি আরো জটিল হয়ে পড়ে তাহলে অপারেশন করা লাগে।
প্রাথমিক পর্যায়ের পলিপাসের জন্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয় যেমন ফ্লুটিক্যাসোন, বুডেসোনিড বেক্লোমিথাসোন এগুলো ওষুধ খুবই কার্যকারী প্রাথমিক পর্যায়ের নাকের পলিপাস ভালো করতে এ ওষুধগুলো ভালো কাজ করে।
কিন্তু আপনি আমার লেখাটি পড়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধগুলি কিনে খাবেন না। কারণ আমি জানিনা আপনার পলিপাস এর অবস্থা কি রকম তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন আমি শুধু আপনাকে ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করছি চিকিৎসা দেবার নয়।
নাকের পলিপাস হলে কি কি সমস্যা হয়
পলিপাসের মূল উৎস হচ্ছে এলার্জি। এলার্জি থেকেই পালিপাস হয়ে থাকে। নাক দিয়ে
পানি পড়া অবস্থায় নাক বন্ধ হয়ে থাকা, ধোয়া, ধুলো এবং রাসায়নিক পদার্থের
কারণে নাক শিরায় জীবাণু জন্মে পলিপাস হতে পারে। পলিপাস হওয়ার অন্যতম
কারণগুলো হচ্ছে।
- মুখ ও মাথা প্রচন্ড ব্যথা।
- একটানা এক সপ্তাহের বেশি নাক বন্ধ থাকা।
- নাক দিয়ে জল পড়া
- মাঝে মাঝে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া নাক দিয়ে কোনরকম গন্ধ না পাওয়া।
- রাতের বেলা ঘুমানোর সময় নাক ডাকা।
- পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
- মাথা ভারী হয়ে থাকা চোখ মুখ ফুলে যাওয়া।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
- উপরের চোয়ালে ব্যথা করা।
নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
যেহেতু নাকের পলিপাস এটি একটি বড় সমস্যা না আমরা যদি উপযুক্ত চিকিৎসা পায় তাহলে খুব দ্রুতই সেরে ওঠা সম্ভব এই রোগ থেকে। নাকের পলিপাস সাধারণত দুই ধরনের হয় মেক্সিলারি এনট্রোকন ও ইটমাইরেল দুই ধরনের পলিপাসকে ঘরোয়া মাধ্যমে নির্মূল করা সম্ভব যদি পলিপাসটি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে। কিন্তু পলিপাসের উৎস কোথা থেকে সেটি যদি আমরা নির্মূল করতে পারি তাহলে তো আমাদের পলিপাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
তাই আমাদেরকে প্রথমে কোন কারণগুলো থেকে পলিপাস হয় সেই কারণগুলো নির্মূল করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা প্রথমেই বলেছি পলিপাসের মূল উৎস এলার্জি ও জীবাণু। আমরা যদি এই দুটি রোগ থেকে দূরে থাকতে পারি তাহলে আমাদের পলিপাস হবে না। তবে আপনি যদি পলিপাস আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে কিছু খাদ্যের মাধ্যমে সারানো সম্ভব চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আদা খাওয়ার মাধ্যমে পলিপাস দূর করা সম্ভব। আদায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল
ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাছাড়া আদায় রয়েছে নানান রকমের স্বাস্থ্য
উপকারিতা। আদা হচ্ছে একটি ভেষজ ওষুধ তাই আদাকে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায়
রাখতে হবে প্রতিটি তরকারির সঙ্গে আদা খেতে হবে নিয়মিত আদা খেলে শরীরের ক্লান্তি
ব্যথা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এছাড়াও আদা শরীর থেকে নানা
ব্যাকটেরিয়াকে মুছে ফেলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন আদা খেলে পলিপাস থেকে মুক্তি
পাওয়া যায়।
রসুন আমাদের দেহে অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। রসুন আমাদের শরীরের
পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য রক্ত থেকে মুক্তি
দিয়ে থাকে এছাড়াও প্রতিদিন খাবার তালিকাতে রসুন রাখলে পলিপাস রোগ আক্রমণ করতে
পারেনা। রসুন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই প্রতিবেলায় রসুন
খাওয়ার চেষ্টা করুন কাঁচা রসুন খাদ্য তালিকা রাখুন।
হলুদে আছে। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যা এলার্জি দূর করতে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে থাকে। আমরা প্রথমেই জেনেছি পলিপাসের মূল উৎস অ্যালার্জি তাই আমরা যদি এলার্জিকে নির্মূল করতে পারি তাহলে পলিপাস আমাদেরকে আক্রান্ত করতে পারবে না তাই প্রতিদিন খাবার তরকারিতে হলুদ রাখতে হবে এছাড়া আপনি কাঁচা হলুদ খেতে পারেন মধুর সঙ্গে মিশিয়ে। যার শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
নাকের পলিপাস এর চিকিৎসা
বর্তমান সময়ে পলিপাসে আক্রান্ত অনেকেই হচ্ছে। যার সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে অনেকে সমস্যাতে পড়ছে। পলিপাস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে মেক্সিলারি এনট্রোকন ও ইটমাইরেল পালিপাস দুটোকে ওষুধের মাধ্যমে সারানো সম্ভব কিন্তু যদি পলিপাসটি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে। মানুষ মনে করে আমার তো নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে তার কারণ হয়তো ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু সে বুঝতে পারে না সে পলিপাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রাথমিক পর্যায় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি উপরের অংশ ভালো করে পড়বেন তাহলে বুঝতে পারবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে পলিপাস হলে কি ওষুধ ড্রপ ও নিয়মিত চলাফেরার মাধ্যমে সেরে উঠা যায়। কিন্তু যদি পলিপাস টা জটিল পর্যায়ে চলে যায় তাহলে সেটিকে অপারেশন করা লাগে এটি কোন বড় ধরনের অপারেশন না তাই অল্প কিছু দিনের মধ্যে সেরে উঠে। তেমন বড় ধরনের খরচ হয় না স্বল্প কিছু খরচের মাধ্যমে অপারেশনটা করিয়ে নেওয়া যায়।
প্রিয় পাঠক পলিপাস এর লক্ষণ সম্পর্কে আর্টিকেলটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ধারণা
দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পলিপাসের চিকিৎসা পলিপাস হলে কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আর্টিকেল আমি আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে পলিপাস
সম্পর্কে সুন্দর একটি ধারণা পেয়েছেন।
Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান
comment url