পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ

অসুস্থ প্রতিটি মানুষই হয়ে থাকে, তবে সবার রোগ এক হয় না।একেক জন মানুষ এক এক রোগে  আক্রান্ত হয়ে থাকে। বিভিন্ন রোগের মধ্যে আজকে আমরা একটি রোগ নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে পিত্তথলিতে পাথর।

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ
আজকে আমরা জানবো পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ এবং পিত্তথলিতে পাথর গলানোর হোমিওপিপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ এবং পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ সম্পর্কে সম্পূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পেটে পাথর হওয়ার কারণ

পিত্তথলিতে পাথর বা পেটে পাথর নারী ও পুরুষ উভয়েরই হয়ে থাকে তবে এ রোগটি পুরুষের তুলনায় নারীদের একটু বেশি হয়ে থাকে। অনিয়মিত জীবন যাপনের জন্য পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়া। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খাওয়া। মেনোপজের পর হরমোন ক্ষরণে ঘাটতি ইত্যাদি অভ্যাসের কারণে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে তৈলাক্তক বা চর্বি জাতীয় খাদ্য অভ্যাস যাদের ওজন অনেক বেশি তাদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ থাকে। মানুষের শরীরে মূলত দুই ধরনের পাথর পাওয়া যায় কোলেস্টেরল ও পিগমেন্ট।

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ অনেকভাবেই বোঝা যায় তবে যে লক্ষণগুলো দেখা দিলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ বেশি থাকে এগুলোই নিচে উল্লেখ করা আছে।

  •  পেটের ডান দিকে তীব্র ব্যথা হবে। এই ব্যথা ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারে কিংবা তারও বেশি। 
  • পেটের পিছন দিকে কাঁধে কিংবা পেটের মাঝখানে ডানদিকে এমনকি বুকে ব্যথা হতে পারে।
  • বমি হওয়া কিংবা বমি বমি ভাব হওয়া সেই সঙ্গে জ্বর আসতে পারে।
  • অনেক সময় পিত্তথলি থেকে পাথর বের হয়ে যায় তখন জ্বর অতিরিক্ত বমি আবার জন্ডিস হতে পারে।
  • অনেক সময় তৈলাক্ত বা চর্বি জাতীয় খাবারের জন্য পেট ব্যথা করতে পারে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পিত্তথলির পাথর

পিত্তথলিতে পাথর আসলে ছোট ছোট বালুর দানার মত হয় আবার মোটরের দানা বা তার তার চেয়েও একটু বড় শক্ত হয়। এ পাথর মূলত তিন রঙের হয়ে থাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্য রঙের হয়। কোলেস্টেরল ও পিগমেন্ট এর সংমিশ্রণে পাথরগুলো তৈরি হয়ে থাকে।

এই পাথরগুলো পিত্তরসের সঙ্গে মেশানো অবস্থায় থাকে।পাথরগুলো হালকা বাদামী ময়লাটে সাদা ও কুচকুচে কালো রঙ্গের হয়ে থাকে। পেটের ডান দিকে পিত্তথলি থাকে পিত্তরস তৈরি করায় এর কাজ। খাবার হজম করে বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার হজম করতে পিত্তরস  হয়।নানা কারণে পিত্তথলিতে ময়লা জমে গিয়ে পাথরের সৃষ্টি হয়।

পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ

পিত্তথলির পাথর উন্নত প্রযুক্তি ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে পিত্তথলি থেকে বের করে আনা হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন অপারেশন ছাড়াই পেটে চারটি ছিদ্র করে পাথর বের করে আনা হয় এতে করে রোগী সুস্থ থাকে দুই থেকে তিন দিন পর বাসায় চলে যেতে পারে।

অনেকে মনে করে ল্যাপারোস্কপির সাহায্যে পিত্তথলি থেকে পাথর বের করলে পাথর থেকে যায়। আসলে এটা সম্পূর্ণই ভুল তথ্য এটি একটি উন্নত প্রযুক্তি এটা থেকে কোন সমস্যা হয় না। তবে আপনি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। পিত্তথলির পাথর গলানোর কোন ওষুধ থাকে না তবে পাথর এক ধরনের হয় না দুই তিন ধরনের হয়ে থাকে কিছু পাথর আছে যেগুলো ওষুধ কিংবা প্রাকৃতিক কিছু খাবারের মাধ্যমে গলানো সম্ভব।

  • কোলেস্টেরল
  • পিগমেন্ট
  • মিক্সড 

এই তিনটি পাথরের মধ্যে কোলেস্টেরল ওষুধের মাধ্যমে গলিয়ে ফেলা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভালো একটি চিকিৎসক দেখাতে হবে ভালো আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে পরীক্ষা করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে পাথর গলার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার ও চলাফেরা করতে হবে।

 পিত্তথলিতে পাথর গলানোর হোমিও প্যাথিক ঔষধ 

চিকিৎসা গবেষণায় পরিচিত কোলেলিথিয়াসিস নামে। অনেক হোমিও চিকিৎসক বলে পিত্তথলিতে পাথর হলে হোমিও চিকিৎসায় সুস্থ হয় না। তারা বলে এর জন্য সার্জারি বা অপারেশন করা লাগবে। তবে বড় বড় হোমিওপ্যাথিক সার্জেন রা বলে থাকে হোমিওপ্যাথি ঔষধের মাধ্যমে পিত্তথলির আরোগ্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভালো একটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।

তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডাক্তারেরা বলে থাকে কিছু কিছু খাবারের মাধ্যমে পিত্তথলি থেকে পাথর গলিয়ে ফেলা যায় চলুন জেনে নেওয়া যাক। যদি আপনাকে চিকিৎসক বলে আপনার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলতে হবে। আপনি ঘরোয়া উপায়ে আপনার পিত্তথলির পাথর গলাতে পারবেন। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন ঘরোয়া উপায়ে ভালো হবে না সার্জারি ছাড়া।আপনার ধারণা ভুল অনেক বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে ঘরোয়া উপায়ে পিত্তথলির পাথর গলানো সম্ভব।

পিত্তথলিতে পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায়

পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলেই আমরা প্রথমেই পিত্তথলির পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করি। পিত্তথলিতে পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে এখানে সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করা আছে আপনি এই নিয়মগুলো মেনে চললে পিত্তথলির পাথর ঘরোয়া উপায়ে গলানো সম্ভব।

  • আপেল আপেলে অন্য এসেনশিয়া নিউট্রিয়েন্টের সাথে প্রচুর ম্যালিক এসিড থাকে। আপেলের ম্যালিক অ্যাসিড পাথর গলাতে সাহায্য করে। 

  • নাশপাতি নাশপাতির মতোই কিন্তু মানুষের পিত্তথলির আকৃতি।কোলেস্টেরল শক্ত হয়ে পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয়। নাশপাতির রস কোলেস্টেরল এর সমৃদ্ধ হয়ে পিত্তথলিতে পাথর জমতে বাধা দেয়।

  • আপেলের সিডার ভিনেগার এটিও একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা পিত্তথলিতে পাথর জমতে বাধা দেয়। শরীরে কোলেস্টোরলের মাত্রা বেড়ে গেলে পিত্তথলিতে পাথর জমে যায়। আপেল সিডার ভিনেগার শরীরের কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয় তাই প্রতিদিন এক গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেতে পারেন।

  • লেবুর শরবত পিত্তথলির পাথর গলাতে সাহায্য করে লেবুর রস আপেল সিডার ভিনেগারের মতোই লিভার থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই দিনে দুই থেকে তিনবার লেবুর রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া উচিত।
  • মুলা আমরা যদি প্রতিনিয়ত তিন থেকে চারটি মোলা খেতে পারি তাহলে পিত্তথলির পাথর গলে যাবে। মুলা পাথর তৈরিতে বাধা দেয় তাই আমরা খাবারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মুলা রাখবো।

প্রিয় পাঠক পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি পিত্তথলির পাথর কয় ধরনের হয়।পেটে পাথর হওয়ার লক্ষণ,  পিত্তথলিতে পাথর গলানোর হোমিওপিপ্যাথিক ঔষধ গুলোর নাম সম্পূর্ণ  আলোচনা করেছি। আশা করি পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ পিত্তথলিতে পাথর হলে কি বিষয় মেনে চলতে হবে সে সম্পূর্ণ একটি ধারণা পেয়েছেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান

comment url