অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
অ্যালোভেরা হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীর ও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী একটি উদ্ভিদ। অ্যালোভেরাতে এমন বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ প্রয়োজনীয় আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে সুস্থ রাখতে এলোভেরার জুস বেশ উপকারী একটি উপাদান।
এছাড়াও অ্যালোভেরা আমাদের ত্বকের জন্য বিশেষ করে স্কিন কেয়ারের জন্য বেশ পরিচিত একটি উপাদান। এলোভেরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা
এখন থেকে প্রায় ৬০০০ বছর আগে অ্যালোভেরার দেখা মিলেছিল মিশরে, এই অ্যালোভেরা কে সেই সময়কালে বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হতো অ্যালোভেরাতে রয়েছে ওষুধে গুণসম্পন্ন বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো এসিড এর মতো নানা উপকারিতা উপাদান যা বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং আমাদের ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী একটি উপাদান। প্রাচীনকাল থেকে অ্যালোভেরা কে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ করে অ্যালোভেরার পাতার ভিতরে থাকা জেলকে ব্যবহার করা হয়।
অ্যালোভেরাতে থাকা কিছু উপকারিতা যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- অ্যালোভেরাতে রয়েছে ল্যাকটেটিভ উপাদান চকলেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি বাড়ায় অ্যালোভেরা তে থাকা জুসকে পানির সঙ্গে মিশিয়ে জুস বানিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে এই সমস্যা দূর হবে এবং শরীরের ক্লান্তি আসবেনা মস্তিষ্ক ভালো থাকবে।
- অ্যালোভেরা তে রয়েছে এমন কিছু ভিটামিন ও উপকারী উপাদান যা আপনার শরীরের রক্তচাপ কমায় রক্তের কোলেস্টেরল ও সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে আপনার যদি প্রেসার থেকে থাকে তাহলে সপ্তাহে অন্তত দুইবার অ্যালোভেরার জুস খাওয়া উচিত।
- দেহে ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করা থেকে দূরে রাখে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে কারণ অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পানি।
- অ্যালোভেরার টাকা বিশেষ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস আক্রমণ থেকে রক্ষা করে, অ্যালোভেরাই থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে।
- মুখের ব্রণ ভালো করতে এবং তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য অ্যালোভেরা, ভিটামিন ই এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিয়ে মুখে লাগালে মুখে ব্রণ ও তৈলাক্ত ভাব দূর হয়।
অ্যালোভেরার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পূর্ণ পড়ুন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম
- অ্যালোভেরা এবং গোলাপ রস একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন গোসলের পরে পুরো শরীরে ব্যবহার করলে শরীরের শুষ্ক ভাব দূর করে।
- প্রতিদিন অ্যালোভেরার জেল মুখে ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও ইসমত করে এবং ত্বকের লালচে ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করে।
- অ্যালোভেরা, লেবুর রস এবং ডিমের ভিতরের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো মুখে ব্যবহার করলে মুখের মেছতা ভালো করে এবং মুখের উপর থেকে বয়সের ছাপ কামাই।
- ত্বক ফর্সা করার জন্য অ্যালোভেরা এর সঙ্গে এক চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, গোলাপজল এবং এক চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে বিশ মিনিটের মত মুখে লাগিয়ে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ত্বক উজ্জ্বল হবে এভাবে এক সপ্তাহের মতো করতে থাকুন দেখবেন ফলাফল আসছে।
- অ্যালোভেরাতে প্রচুর উপকারিতা থাকার ফলেও আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন কাঁচা অ্যালোভেরা ব্যবহার করার ফলে শরীরে অ্যালার্জি হতে পারে এছাড়াও ঠান্ডা লাগতে পারে তাই অ্যালোভেরা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
বর্তমান সময়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিউটি ক্রিম আমরা ব্যবহার করে থাকি যে ক্রিম গুলোর মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে স্কিনের সমস্যা হয়ে থাকে তাই ত্বক ভালো রাখতে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে আর কিছু ভালো মানের প্রোডাক্ট আছে যেগুলো ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর থাকে, এই প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অ্যালোভেরার জেল যা আমাদের শরীর এবং ত্বক দুটোর জন্যই বেশ উপকারী।
অ্যালোভেরা একটি ওষুধি গুণসম্পন্ন গাছ এটি আমরা সকলেই জানি। অ্যালোভেরার জেল এবং দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি ধুয়ে ফেলুন এভাবে সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ তিন ব্যবহার করুন কিছুদিন পরে বুঝতে পারবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা আগের থেকে অনেকটা ভালো লাগছে।
এছাড়াও যদি আপনার মুখের ব্রণ অনেকটা বেশি থাকে তাহলে অ্যালোভেরার জেল প্রতিদিন মুখে ২০ মিনিট মত লাগিয়ে রাখুন দেখবেন ৭ দিন পরে একটা সুন্দর রেজাল্ট পেয়েছেন। এছাড়াও অ্যালোভেরার জেল নিয়মিত ব্যবহার করলে মেস্তা এবং মুখের বয়সের ছাপ দ্রুত পড়ে না। বর্তমান সময়ে অ্যালোভেরার জেল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিউটি ক্রিম তৈরি হচ্ছে যেগুলো আমাদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী স্কিন-ক্রিম।
অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম
অ্যালোভেরার জেল শুধু ত্বক এবং ঔষধি ও কাজে যে ব্যবহার হয় তা কিন্তু না, ত্বকের সঙ্গে চুল ঘন এবং চুলের বিভিন্ন রোগ ,থেকে মুক্তি পেতে এবং চুলকে সুন্দর করতে অ্যালোভেরা চুলে ব্যবহার করা হয় অ্যালোভেরা জেল ঘন জেলির মত যার কোন গন্ধ নেই ত্বক এবং চুলের জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে অ্যালোভেরার জেলে।
ভিটামিন, মিনারেল এবং বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা চুল বৃদ্ধিতে এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে এছাড়াও চুলের গোড়ায় খুশকো ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এটি চুলকে হাইড্রেটিং এবং ময়শ্চারাইজ করে থাকে অ্যালোভেরার ছেলে প্রাকৃতিক একটি উপাদান আছে যা চুলকে হাইড্রেটিং এবং ময়শ্চারাইজ করে অ্যালোভেরার জেল চুল ওঠা থেকে চুলের গোড়া ফেটে যাওয়া এবং পাতলা চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে।
পাতলা চুলকে ঘন করতে এবং চুল উঠে গেলে অ্যালোভেরার অ্যাম্প ব্যবহার করতে হবে চুলে এছাড়াও অ্যালোভেরার তেল পাওয়া যায় যা চুল পড়া রোগ দূর করে এবং চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে। চুলের সমস্যা যদি অধিক বেশি থাকে তাহলে চুলে অ্যালোভেরার জেল সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যাবে এছাড়াও অ্যালোভেরার তেল চুলে শ্যাম্পু করার পরে ব্যবহার করলে চুলের জন্য ভালো হয়।
আসল অ্যালোভেরা জেল চেনার উপায়
বাজারে বিউটি ক্রিম কিনতে গেলে আমরা সবাই একটি কনফিউশন এর মধ্যে থাকি এটা কি আসলে অরজিনাল নাকি ডুপ্লিকেট তবে প্রতিটি প্রোডাক্ট কিনার আগে আপনাকে প্রোডাক্টের গায়ের লেখা ভালোভাবে পড়তে হবে বিশ্বস্ত কোম্পানির প্রোডাক্ট নিতে হবে কোম্পানির লোগো এবং স্ক্যানার থাকলে স্ক্যান করতে হবে এবং সবচাইতে যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটি হচ্ছে যেই দোকান-শপিংমল থেকে কিনবেন তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে।
তাহলে সে ভালো প্রোডাক্ট দিবে। এছাড়া আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন এটি আসলে আসল নাকি নকল তা ছাড়া চেনার কোন উপায় নাই। তবে অ্যালোভেরার জেল বাজার থেকে না কিনে, অ্যালোভেরার গাছ লাগিয়ে প্রতিদিন অ্যালোভেরার জেল ব্যবহার করাটাই বেশি উপকারে আসবে।
রাতে অ্যালোভেরা ব্যবহার
যেকোনো স্কিন ক্রিম রাত্রে এবং সকালে লাগালে সবচেয়ে ভালো হয় আমরা সকলেই জানি। তবে অ্যালোভেরা জেল এর ক্ষেত্রে সময়টা একটু ভিন্ন। কারণ অ্যালোভেরা জেল যেকোনো সময় লাগাতে পারেন কারণ এটি লাগিয়ে রাখতে হয় না,অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখকে ফেসিয়াল করতে হয় তবে যে কোন সময়ের ক্ষেত্রে সকালবেলা এবং রাত্রে ঘুমানোর আগে যদি ফেসিয়াল করতে পারেন তাহলে ত্বক বেশি সুন্দর থাকে।
অ্যালোভেরা জেল এর সঙ্গে আরও বিভিন্ন উপাদান আছে যেগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে ব্যবহার করলে মুখের এবং তৈলাক্ত ভাগ দূর করে যেমন টি-ট্রি অয়েল,টক-দই, অ্যালোভেরা, ডিমের সাদা অংশ এবং কাঁচা হলুদের গুড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট এর মত বানিয়ে ব্যবহার করলে স্কিনের বিভিন্ন সমস্যা ভালো হয়।
Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান
comment url