এলার্জি দূর করার উপায়

 

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে। এলার্জি কি করে ভালো করা যায়, কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে, এলার্জির লক্ষণ এলার্জি দূর করার উপায় সমস্ত বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করব এলার্জি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আশা করি উপকৃত হবেন।

এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি, এর অস্থির যন্ত্রণাদায়ক রোগটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ জন্মগ্রহণের পর শতকরা ৩০ ভাগ মানুষের এই এলার্জিজনিত রোগ হয়। এলার্জিকে ভালো রাখতে আমাদের কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হয় আবার চিকিৎসা মতে কিছু ওষুধ আছে যা খেলে সাময়িক সময়ের জন্যে সুস্থ থাকা যায়।কারো কারো ক্ষেত্রে ভালো হয়েও যায়। চলুন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করি কোন কাজ গুলো থেকে দূরে থাকলে এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় আর কোন ওষুধ গুলো খেলে সুস্থ থাকা যায়।

প্রথমে আসি খাবারের কথায় এলার্জি মানুষের শরীরে নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে তার মধ্যে একটি হচ্ছে খাবার যে কোন খাবার খাওয়ার কারণে আপনার অ্যালার্জি হতে পারে সেটা হতে পারে বেগুন আবার হতে পারে গরুর মাংস এক এক জনের একেক রকম খাবারে এলার্জি আছে তাই আপনার যদি এলার্জি থাকে তাহলে আপনাকেই খুঁজে নিতে হবে আসলে আপনার কোন খাবারে এলার্জি আছে।

এবার আসি পরিস্কার পরিচ্ছিন্নতা নিয়ে নানান মানুষের নানান রকম ভাবে এলার্জি ছড়িয়ে থাকে যেমন ধরেন আপনি  বিছানায় শুয়েছেন শরীরে চুলকানি শুরু হয়ে গেছে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার বেড অপরিষ্কার থাকার কারণে আপনার এলার্জি হচ্ছে। তাই আপনি যে সমস্ত জায়গা গুলো তে বেশি চলাফেরা করেন সেগুলো পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন তাহলে এলার্জি থেকে দূরে থাকা যাবে।

আরো পড়ুন: জ্বর হলে করণীয় ঘুম 

ডাস্ট বা ময়লা এ কারণটির জন্য বেশিরভাগ মানুষের এলার্জি হয়ে থাকে বাসা বাড়ির ময়লা কিংবা রাস্তাঘাটের ময়লা কিংবা ধরেন যেকোনো পশুর লোম বা কোন কিছু ছোঁয়ার কারণে ইত্যাদি ময়লার কারণে বেশিরভাগ এলার্জি মানুষের শরীরের সৃষ্টি হয় তাই একটু চেষ্টা করবেন ময়লা জনিত সবকিছু এড়িয়ে চলতে।

কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের রৌদ্রে বের হলে সারা শরীর চুলকতে থাকে মনে হয় যেন অন্যরকম অনুভূতি অস্থির মনোভাব। আপনার যদি এমনটি হয় রৌদ্রে বের হয়েছেন পুরো শরীর চুলকাচ্ছে তাহলে চেষ্টা করবেন ঠান্ডা কিংবা ছায়া জায়গায় চলাফেরা করার কিংবা রুম থেকে না বের হওয়াটাই ভালো।

এবার আসি চিকিৎসকের পরামর্শ এলার্জি খুব একটা জটিল রোগ না কিন্তু কিছু কিছু মানুষের জন্য খারাপ কিছু বয়ে নিয়ে আসে তাই আপনার যদি এলার্জির কারণে সর্দি বুকের মধ্যে কফ জমে থাকা চোখ ফুলে যাওয়া ঠোঁট ফুলে যাওয়া কিংবা রক্ত চুলকানি ইত্যাদি অতিরিক্ত হয়ে থাকে তাহলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরী। আর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন বাইরের কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন সুস্থ থাকুন।

এলার্জির লক্ষণ গুলো কি কি

এলার্জির চিকিৎসা অনেক ধরনের আছে একদম সেরে না গেলেও অনেকটা কমিয়ে আনা যায় চলুন আজকে আমরা জানবো এলার্জি হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়।

  1. শরীরের চাকা চাকা লাল হয়ে ফুলে যাওয়া
  2. চোখ মুখ ঠোট ফুলে যাওয়া
  3. পুরো শরীর অস্থির ও ক্লান্তি মনোভাব হওয়া
  4. মাথা ঘোরানো মনে হয় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
  5. শ্বাসকষ্ট শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ করা
  6. বুক ধরফর ও পুরো শরীর ঘেমে যাওয়া
  7. চোখ চুলকানো চোখের ভিতরে লাল হয়ে যাওয়া

এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

কোন কোন খাবারে এলার্জি থাকবে আর কোন কোন খাবারে এলার্জি থাকবে না তা বলা সম্ভব না। তবে ডাক্তারি গবেষণায় প্রোটিন জাতীয় খাবারে এলার্জি বেশি থাকে। কিন্তু কোন খাবারে আপনার অ্যালার্জি আছে আর কোন খাবারে এলার্জি নাই সেটি বোঝা সম্ভব না।

তবে আপনি যদি সে খাবারগুলি খান আর আপনার অ্যালার্জি হয় তাহলে বোঝা সম্ভব যে আপনার কোন খাবারে এলার্জি আছে। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে মানুষের অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কি কি খাবার খেলে এলার্জির প্রবণতা বেশি থাকে। 

  • দুধ প্রতিদিন পুষ্টির জন্য আমরা দুধ খেয়ে থাকি, কিন্তু এই দুধ এ প্রচুর পরিমাণে এলার্জি আছে বিশেষ করে গরুর দুধে বেশি যা কিনা শিশুদেরকে বেশি আক্রান্ত করে।
  • দুধের মতই ডিম আমরা খেয়ে থাকি শরীরে পুষ্টি যোগানোর জন্য কিন্তু এই ডিমেও আছে প্রচুর এলার্জি বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশে অনেক পরিমাণে এলার্জি থাকে। তাই যাদের অ্যালার্জি আছে ডিম না খাওয়াটাই ভালো।
  • মাংস, মাংসে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি আছে বিশেষ করে গরুর মাংস রাজহাঁসের মাংস পাতি হাঁসের মাংস মুরগির মাংস ইত্যাদি মানুষের প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে তাই যাদের মাংসে এলার্জি আছে। তাই যাদের যে মাংসে এলার্জি আছে সে মাংস না খাওয়াটাই ভালো।
  • বাদাম, গবেষণায় দেখা গেছে শিশুদের ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৮ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৪ শতাংশ এলার্জি হওয়ার প্রবণতা থাকে বাদামে। তবে সব বাদামেই যে এলার্জি আছে কিংবা সবার যে বাদামেই অ্যালার্জি আছে তা নয়। তবে সব বাদামের তুলনায় চিনা বাদামে একটু বেশি অ্যালার্জি থাকে।
  • শেল ফিস, আসলে শেল ফিশ নামে কোন মাছই নেই। শেল ফিস বলতে সেই ধরনের মাছকে বোঝানো হয় যে মাছগুলোর শক্ত খোসা বা আবরণ দিয়ে ঢাকা থাকে। এই ধরনের মাছগুলোতে অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। বিভিন্ন ধরনের শেল ফিস মাছ যেমন চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক ইত্যাদি।
  • গম বা গমের আটা দিয়ে তৈরি খাবার এ আছে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি । গমের আটার পাউরুটি গমের আটার রুটি ইত্যাদি খাবার খেলে এলার্জি হয়ে থাকে।
  • সয়াবিন জাতীয় খাবারে এলার্জি। সোয়াবিন জাতীয় খাবার বড়দের তেমন ক্ষতি হয় না তবে ১০ বছর বয়সী শিশুদের নিচের শিশুদের বেশি ক্ষতি হয় সয়াবিন জাতীয় খাবারের জন্য।
  • কারো কারো ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মাছ এ অ্যালার্জি থাকে। তবে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছগুলোতে বেশি এলার্জি থাকে ।তবে সবার মাঝে এলার্জি থাকে না তাই আপনার মাঝে এলার্জি না থাকলে মাছ খেতে পারে।
  • এসব ছাড়াও বেশ কিছু ফল ও শাকসবজিতে এলার্জি আছে যেমন ধরেন বেগুন, পুঁইশাক, পালং শাক, টমেটো, গাজর, পিচ ফল, কলা ইত্যাদি থেকে এলার্জি হয়ে থাকে।

এলার্জি হলে কি কি খাওয়া যাবে

বর্তমান সময়ে অ্যালার্জির প্রবণতা এতটা বেশি যে প্রতিটি পরিবারে একজন করে এলার্জি রোগে আক্রান্ত মানুষ পাওয়া যায়। কিছু কিছু মানুষের এলার্জি এতটাই বেশি যে তাদের সব ধরনের খাবারে এলার্জি আছে। চলুন তাহলে জেনে নিই কোন খাবারগুলোতে এলার্জি নেই কিংবা খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে।

  • আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যে খাবারগুলোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যাতে ন্যাচারাল এন্টিভাইরাল ও আন্টি প্রদাহ কেমিক্যাল থাকায় এলার্জির প্রবণতা কমতে সাহায্য করে যেমন পেঁয়াজ, আপেল, আঙ্গুর, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ ইত্যাদি।
  • লেবু, কমলালেবু সহ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ওমেগা-৩ ফ্যাট সমৃদ্ধ মাছ তেল ইত্যাদি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার যেমন টক দই, টক ফল ইত্যাদি এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে । এই ধরনের খাবারগুলোতে এলার্জির প্রবণতা কম থাকে।
  • আপনার যদি অতিরিক্ত এলার্জি থাকে সমস্ত খাবারে এলার্জি অবশ্যই আপনি একটি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন তিনি আপনাকে খাবারের রুটিন বানিয়ে দিবে সে অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া করবেন।

প্রিয় পাঠক এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার চেষ্টা করেছি ।এলার্জি কি কারণে হয়, কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে, এলার্জি দূর করার উপায় সবকিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আশা করি আমার লেখাটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান

comment url