সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত

দিনটা যদি সুন্দরী না হয় অসুস্থ অসুস্থ মনে হয় তাহলে তো আমাদের কাজে মন বসবে না। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবোনা দিনটা সুন্দর করতে স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত আর সেটি যদি দিনের শুরুতেই হয় তাহলে তো পুরো দিন সুন্দরভাবেই কাটবে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত। স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা কোনগুলো জেনে নি।

সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত

প্রিয় পাঠক লেখাটির মাধ্যমে আমরা সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত, স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা কোনগুলো, স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তার তালিকা, সকালের নাস্তার উপকারিতা, মেদ কমাতে সকালের নাস্তায় কোন খাবারগুলো রাখব সম্পূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছি। সমস্ত বিষয় জানতে লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত

সবকিছুর নিয়ম ও সময় দুটোই আছে আপনি যদি সময়ের কাজ সময়ে না করেন তাহলে সেটি ভালো হবে না। এমন কি খাবার খাওয়ারও একটা সময় আছে শুধু খাবার খেলে হবে না, সময় মত  খাবার খাওয়ার ওপরেও নির্ভর করে আপনার শরীরকে ভালো রাখতে। তেমনি সকালের নাস্তা করার সময় আছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ৪০ মিনিটের মধ্যে নাস্তা করা উচিত সকালের নাস্তায় প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখা উচিত।

এটি আমাদের শরীরে সারাদিনের এনার্জি দিয়ে থাকে এবং প্রতিটি কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় রাতের খাবারের পর প্রায় ৬ থেকে ৮ ঘন্টা আমাদের শরীর খাবার পায় না তাই সকালের নাস্তা ৭ থেকে ৯ টার ভেতরে সেরে ফেলা উচিত। যদিও অনেকে, অনেক ব্যস্ততার কারণে সকালের নাস্তাটা সময়মতো খাওয়া হয় না তবে চেষ্টা করতে হবে ১০ টার ভিতরে সেরে ফেলার।

আর ১০ টার পরে সকালের নাস্তা করলে দুপুরের খাবার খেতে অরুচি হয় কিংবা এনার্জি থাকে না দুপুরের খাবার খাওয়ার। এর ফলে আমাদের শরীরে অসুস্থতা ও কাজে অমনোযোগী হওয়া, কাজের সময় এনার্জি না পাওয়া এ সমস্যাগুলো দেখা দেয়। তাই ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা খুব তাড়াতাড়ি সেরে ফেলুন।

স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা

সকালের নাস্তার উপরে নির্ভর করে আপনার শরীরে সারাদিন কতটা এনার্জি থাকবে। তাই সকালে স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা করা উচিত, আসুন জেনেনি কিছু স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা সম্পর্কে। সকালের নাস্তা বা ব্রেকফাস্ট সারাদিনের জন্য আমাদের শরীরকে প্রস্তুত করে থাকে তাই সকালের নাস্তা বা ব্রেকফাস্ট সময় মত করা উচিত।

সকালের নাস্তা নিঃসন্দেহে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তার তালিকায় রাখতে পারেন ক্যালসিয়াম এবং আঁশ জাতীয় খাদ্য, খেতে পারেন প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতে সকালের নাস্তা ভালো ভূমিকা রাখে, সকালে স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা করলে দুপুরে খুব বেশি খিদে লাগে না, কারণে-অকারণে এটা সেটা খাওয়া লাগে না।

সকালের নাস্তা সঠিক সময়ে খেলে শরীরের ওজন বজায় রাখে, এছাড়াও শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য সকালের নাস্তা স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া খুবই জরুরী, স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা মনোযোগ ও এনার্জি বাড়াতে খুব সাহায্য করে পড়াশোনায় মন বসে, তাই সকালের নাস্তা সময়মতো খাওয়া ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তার তালিকা।

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা

  • ডিম, কলা, টোস্ট
  • আটার রুটি
  • ওটমিল
  • বেরি জাতীয় ফল
  • তিসি
  • ফল
  • চিয়া সিড
  • খিচুড়ি
  • সালাত
  • দই
  • বাদাম
  • প্রোটিন সেক
  • গ্রিন টি

সকালের নাস্তার তালিকা

বর্তমান সময়ে অনেকে সময় মত ঘুমায় না রাত ১-২ টার দিকে ঘুমিয়ে। ঘুম থেকে উঠে দুপুর ১২ টার দিকে, তাই আর সকালের নাস্তা টা খাওয়া হয়না বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মে এই সমস্যাটি বেশি সকালের নাস্তাটি না খাওয়ার ফলে অনেক তরুণ তরুণী নানান সমস্যায় ভুগছে।

পড়াশোনা অমনোযোগী শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাই সকালের নাস্তাটি সময়মতো খাওয়া উচিত আর খাবারের তালিকাতে প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সকালের প্রোটিন পুষ্টি সমৃদ্ধ নাস্তার তালিকা।

  • ডিম, কল, টোস্ট এই তিন খাবার সকালের জন্য খুব দারুণ উপকারী সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা মেটাই ডিম হলো প্রোটিনের সবথেকে ভালো উৎস কলায় আছে পটাশিয়াম ফাইবার এবং টোস্ট শর্করার চাহিদা পূরণ করে থাকে সকালের নাস্তায় ১ থেকে ২ দুইটি ডিম রাখতে পারেন যাদের রক্তচাপ অনেক বেশি তারা কুসুম ফেলে দিয়ে খেতে পারেন কলা ১ থেকে ২ টি এবং টোস্ট ৩ থেকে ৪ টি খেতে পারেন।
  • রুটিতে আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ এর সাথে আরও আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার জাতীয় উপাদান যা সকালের নাস্তার জন্য বেশ প্রয়োজনীয়। গমের রুটি খেলে রক্তচাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত রুটি খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে রক্তের শর্করা ঠিক রাখে। তাই প্রতিদিন সকালের নাস্তায় রুটি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। রুটির সাথে সবজি ভাজি ডাল কলা ডিম খেতে পারেন তবে রুটি যেন তেলেভাজা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
  • খিচুড়ি সকালের নাস্তা হিসাবে খিচুড়ি খুবই উপকারী। অনেকেই সকালে ভাত ছাড়া অন্য কিছু খেতে পছন্দ করে না তবে ভাতের পরিবর্তে সবজি খিচুড়ি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী চালের পরিমাণ কমিয়ে ডাল এবং সবজির পরিমাণ বেশি দিয়ে খিচুড়ি বানিয়ে খেতে পারেন এটি সকালের নাস্তা হিসেবে স্বাস্থ্যসম্মত একটি খাবার।
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের তালিকায় ওটমিল অন্যতম সারাদিনের পরিশ্রমের এনার্জি জোগাতে ওটমিল বেশ কার্যকরী। ওটমিলে আছে প্রোটিন ফাইবার কপার ফসফরাস আয়রন জিংক ফলেট এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন বি-১ থাকে যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারে প্রয়োজন হয়ে থাকে তাই সকালের নাস্তায় ওটমিল রাখতে পারেন ওটমিল ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
  • বেরি জাতীয় ফল সকালের নাস্তা টেবিলে রাখতে পারে বেরি জাতীয় ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মানবদেহের কোষ সুস্থ রাখে বেরি জাতীয় ফলগুলো নিয়মিত খেলে হজম শক্তি ঠিক থাকে কোষ্ঠকাঠিন্যর কোন আশঙ্কা থাকে না সুস্থ জীবন যাপনের জন্য বেরি জাতীয় ফল আমাদের খাওয়া উচিত।
  • সকালের নাস্তার জন্য সবচাইতে ভালো খাবার হচ্ছে ফলমূল। ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ক্যালসিয়াম প্রোটিন ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে থাকে, তাই প্রতিদিন আমাদের নাস্তায় কলা, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, খেজুর, অথবা মৌসুমী ফল রাখতে পারেন এগুলো সকালে নাস্তার জন্য বেশ উপকারী।
  • অনেকে দই খেতে পছন্দ করে না কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী একটি খাবার দই। সকালের নাস্তাটি যদি দই দিয়ে শুরু করা যায় তাহলে সারাটি দিন থাকবে আমাদের শরীরে অফুরন্ত এনার্জি। তুই আমাদের কোলেস্টোরাল ঠিক রাখে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত রোগ থেকে মুক্তি দেয়। তাই প্রতিদিন নাস্তার সঙ্গে দই খাওয়া বেশ উপকারী।
  • গ্রিন টির উপকারিতা অনেক গ্রিন টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ওজন কমায় ও ত্বক সুন্দর রাখে। সকালের নাস্তার এক ঘন্টা পরে গ্রিন টি খাবেন খাবার পর পরে ট্রেনটি খাওয়া যাবে না আর সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে গ্রিন টি একদমই খাওয়া যাবেনা

সকালের নাস্তার উপকারিতা

ঘুম থেকে উঠে দুপুরের খাবার খাওয়া তরুণ প্রজন্মের একটি দৈনন্দিন অভ্যাস অনেকে তো আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা না খেয়েই অফিসে বের হয়ে যায় এভাবে দিনের অনেক সময় না খেয়েই কাটিয়ে দিই আমরা। কিন্তু প্রায় রাতে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা না খেয়ে থাকি আমরা। তাই দিনের শুরুতে সকালের নাস্তাটি স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শুরু করা খুবই জরুরী।

আমাদের শরীর মন এবং কার্যক্ষমতা উন্নতির জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ৪০ মিনিটের মধ্যে নাস্তা করা উচিত কিন্তু সেটাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে ১০ টার ভিতরে সকালে নাস্তা সেরে ফেলতে হবে। নিয়মিত সকালে নাস্তা করলে শরীরে এনার্জি শক্তি বাড়ায়, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য, কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে নিয়মিত সকালে নাস্তা করলে আমরা এই উপকার গুলো পেয়ে থাকি।

মেদ কমাতে সকালের নাস্তা

রাতের খাবারের পর থেকে প্রায়ই ৮ ঘন্টা আমরা না খেয়ে থাকি তবুও আমাদের মেদ কমেনা তাই অনেকের সকালের খাবার দিও খায় না কিন্তু আসলে আমাদের সকালের খাবারটি না খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাই সকালের খাবারটি খেতে হবে কিন্তু এমন কিছু খাবার খেতে হবে যেগুলোর মাধ্যমে শরীরের মেদ কমবে এবং আমাদের শরীর অসুস্থ থাকবে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

  • সালত মেদ কমাতে সকালের খাবার তালিকাতে সালাত রাখতে পারেন বিভিন্ন ফলের সালাত কিংবা সবজির সালাত।
  • তিসি ও চিয়া সিড খেতে পারেন মেদ কমতে সাহায্য করে
  • বাদাম মেদ কমাতে বা ওজন কমাতে কাঠবাদাম বেশ উপকারী কাঠ বাদাম খেতে পারেন।
  • দই তুই আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে কোষ্ঠকাঠিন্যকে দূর করে হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তি দেয় ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে তাই প্রতিদিন সকালে দই খেতে পারেন।
  • গ্রিন টি চর্বি বা ওজন কমানোর সবথেকে ভালো উপকারী উপাদান হচ্ছে গ্রিন টি প্রতিদিন সকালের নাস্তার পর গ্রিন টি খেলে মেদ ধীরে ধীরে কমে যাবে মেদ কমানোর উত্তম চাবিকাঠি হচ্ছে গ্রিন টি।

প্রিয় পাঠক লেখাটির মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি সকালের নাস্তা কখন খাওয়া উচিত স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা কোনগুলো মেদ কমাতে কোন খাবারগুলো খেতে হবে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করেছি আশা করি লেখাটি পড়ে আপনি সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Motivational Spech কে আপনার অনুভূতি জানান

comment url